বারকোড (Bar Code) কি

কোনো দ্রব্য বা আচ্ছাদনের (Cover) গায়ে পাশাপাশি অনেকগুলো লম্বা রেখা বা বার থাকে, সাংকেতিক এই রেখাকে বলা হয় বারকোড । সাধারণত পণ্য বা দ্রব্যের মূল্য বা অন্যান্য তথ্যের জন্য বারকোড ব্যবহার করা হয় । একটি স্ট্যান্ডার্ড বার কোড উৎপাদিত দ্রব্যের পরিচিতি, সংখ্যা, উৎপাদন এবং মূল্য নির্ধারণী সংকেত বহন করে । বিশ্বে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রতিটি পণ্যেই এই বারকোড থাকে । এটা ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে পাঠ করে সংখ্যাসূচক সংকেত বা কোড থেকে তথ্য পাওয়া যায় ।

Barcode

বারকোড এর ব্যবহার

একটি জিনিসের বারকোডের সঙ্গে অন্য জিনিসের বারকোডের কোনো মিল নেই । আর মিল না থাকারই কথা । কারণ, সব জিনিসপত্র তো আর এক নয় কিংবা সেসবের মান, উৎপাদনকাল ও দামও এক নয় । তবে পার্থক্যটা খুব স্পষ্ট নয়, বরং খুবই সূক্ষ্ম যা এক রকম ধরা যায় না । বিভিন্ন প্রকার বারকোড ছাপানোর উদ্দেশ্য হলো-ঐসব পণ্য সম্পর্কিত তথ্য ক্রেতাদের জানানো বা অবগত করানো । যেমন-দাম, সংখ্যা, উৎপাদন তারিখ, এক্সপেয়ার ডেট, গুণগত মান ইত্যাদি । এ সংকেত দেখে সাধারণভাবে কোনো ব্যক্তি পণ্যের পূর্বোক্ত তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারে না । শুধুমাত্র কম্পিউটারইজড স্ক্যানার এ তথ্য বা সংকেত পড়তে পারে । দোকানে গিয়ে কোনো জিনিস ক্রয়ের পর ক্যাশিয়ার তার স্ক্যানারের সেন্সর ঐ বারকোডের ওপর দিয়ে শুধু একবার টেনে নিয়ে যায় । সঙ্গে সঙ্গে ঐ পণ্যের যাবতীয় তথ্য কম্পিউটার রেকর্ড করে নেয় এবং সেসব তথ্য কম্পিউটার স্ক্রিণের ওপর ভেসে ওঠে । উন্নত বিশ্বে দোকানিরা এভাবেই পণ্য বিক্রয় করে থাকে । আজ থেকে প্রায় তিন দশক আগে বারকোড এর প্রচলন শুরু হয়েছে । কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার ও প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে বারকোডেরও প্রসার ঘটেছে দ্রুত গতিতে । এক কথায় বলা যায়-দৃশ্যত বারকোড হলো পণ্যের পরিচিতি পত্র ।

 

কিউআর কোড (QR Code) কি

কিউআর কোড (QR Code) এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ‘কুইক রেসপন্স কোড (Quick Response Code)’ । কিউআর কোডগুলি আসলে এক ধরণের বারকোড তবে এর আকৃতি বর্গাকৃতির হয় যা প্রথম জাপানে ডেভলাপ করা হয় এবং ব্যবহৃত হয়েছিল । অন্য যেকোনো বারকোডের মতো, কিউআর কোড মেশিন-পঠনযোগ্য কোড যার প্রত্যেকটি অপটিক্যাল লেবেলে বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ করা হয় । যেমন-ইমেইল অ্যাড্রেস, ফোন নম্বর বা যেকোনো ট্যাক্সট ডাটাও হতে পারে ।

 

Image by Gerd Altmann from Pixabay

কিউআর কোড (QR Code) এর ব্যবহার

বর্তমানে কিউআর কোড এর ব্যবহার সর্বত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে । বিশেষ করে স্মার্টফোনের ক্যামেরাই যথেষ্ট এই কোড রিড করতে; তাই স্মার্টফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি হওয়ায় এর গ্রহণযোগ্যতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে । কিউআর কোড জেনারেট করা ও ব্যবহার করা খবুই সহজ । যেকোনো বারকোড থেকে কিউআর কোড-এ অধিক পরিমান তথ্য সংরক্ষণ করা যায় । একটি কিউআর কোড-এ ৪০০০ অক্ষর পর্যন্ত ধারণ করতে পারে । কিআর কোডের মাধ্যমে-ব্যক্তিগত তথ্য প্রদর্শন (বাড়ির/ব্যবসায়ের ঠিকানা, ইমেইল, ফোন নম্বর, যেকোন বার্তা) করা যায়, অর্থ প্রদান করা যায়, নির্দিষ্ট কোন ওয়েবসাইটে যাওয়ার জন্য লিংক করা যায়, অনলাইন অ্যাথরাইজেশন বা ওয়াই-ফাই কানেক্টিভিও অ্যাথরাইজেশন করা যায় ।

 

বার কোড এবং কিউআর কোডের মধ্যে মূল পার্থক্য:

১. কিউআর কোড এক ধরণের বারকোড হলেও এটি ২ডি বা দ্বিমাত্রিক ট্র্যাক ব্যবহার করে তাই এটি যেকোনো অ্যাঙ্গেল থেকে স্ক্যান করা যায়, যার জন্য একটি স্মার্টফোনের ক্যামেরাই যথেষ্ট । অন্যদিকে একটি বেসিক বারকোড ১ডি উপায়ে তথ্য সংরক্ষণ করা হয় এবং শুধুমাত্র বারকোড স্ক্যানার দ্বারাই স্ক্যান করা যায় ।

২. বার কোডগুলি বিভাজন সহ্য করতে পারে না অন্যদিকে কিউআর কোডগুলি ক্ষয় সহ্য করতে পারে যা (0 থেকে 30% এর মধ্যে কনফিগারযোগ্য) তাই বারকোডের তুলনায় কিউআর কোডগুলিতে তথ্য সঞ্চয় করতে কম জায়গার প্রয়োজন হয়

 

ভবিষ্যতে কিউআর কোড কি বারকোডের জায়গা দখল করবে?

না আপনি যদি মুদি দোকানের আইটেমগুলি লক্ষ্য করেন তবে তাদের কাছে এখনও বেসিক বার কোড রয়েছে এটি কেবল কারণ দোকানে কেবলমাত্র একটি পণ্য আইডি প্রয়োজন এটি তাদের পয়েন্ট অফ বিক্রয় ব্যবস্থায় একটি দাম এবং পণ্যের নামের সাথে যুক্ত আপনি যখন পণ্য নম্বরটি স্ক্যান করেন, তখন গ্রাহককে চার্জ করা, ইনভেন্টরি আপডেট করা এবং আরও অনেক কিছু করার জন্য এটি যথেষ্ট তথ্য

 

কিভাবে কিউআর কোড তৈরি করবেন

চাইলে সহজেই কিউআর কোড তৈরি করা যায় । আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী (ইউআরএল, টেক্সট, ই-মেইল, এসএমএস, ভি-কার্ড, মি-কার্ড, লোকেশন, ফেইবুক/টুইটার/ইউটিউব কন্টেন্ট, ওয়াই-ফাই অথরাইজেশন, ইভেন্ট) সম্বলিত কিউআর কোড তৈরি করতে https://www.qrcode-monkey.com/ এই ওয়েবসাইট বেশ কাজের । নিম্নে আরও কয়েকটি অনলাইন কিউআর কোড জেনারেটর দেওয়া হলো ।

https://www.qr-code-generator.com/

https://www.the-qrcode-generator.com/