বিশ্বের সব দেশেই নববর্ষকে ঘিরে নানা রকম উৎসব পালন করা হয় । প্রতিটি সমৃদ্ধ জাতির আছে নিজস্ব নববর্ষ । বাংলা ভাষাভাষীরা বৈশাখের প্রথম দিনে পালন করে থাকে ‘পহেলা বৈশাখ’। অন্যদিকে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব ‘বৈসাবি’ । এ উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর চৈত্রের শেষ দুদিন এবং পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষকে ভিন্নরূপে উৎযাপন করে পাহাড়ের মানুষ । 

pahela-boishakh-history-of-bengali-new-year-celebrations
Image source : wikimedia

বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস

আমাদের দেশে প্রচলিত বঙ্গাব্দ বা বাংলা সন মূলত ইসলামী হিজরি সনেরই একটি রূপ । দিল্লির সম্রাট আকবর ৯৬৩ হিজরি, ২ রবিউস-সানি, রোজ-শুক্রবা, ইংরেজি ১৪ এপ্রিল ১৫৫৬ তারিখ থেকে পহেলা বৈশাখ পালনের রেওয়াজ শুরু করেন । সেই থেকে ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই এপ্রিল ১লা বৈশাখ বছরের অর্থাৎ বাংলা সনের প্রথম দিন হিসেবে স্বীকৃতি পায় । এছাড়া সম্রাট আকবর বৃহত্তর কৃষক সমাজের কর আদায়ের সুবিধার্থে ফসল ওঠার মৌসুম এবং খাজনা আদায়ের জন্য এ দিনটিকে নির্বাচন করেন । সে কারণে সেটি ফসলি অব্দ নামেও স্বীকৃতি পায় ।

pahela-boishakh-history-of-bengali-new-year-celebrations
Image source : wikimedia

শুভ হালখাতা

সম্রাট আকবরের আমল থেকে কৃষিভিত্তিক জমিদারদের খাজনা পরিশোধের দিন হিসেবে পহেলা বৈশাখ দিনটিতে হালখাতা পালনের রেওয়াজ চলে আসছে । সামন্ত প্রথা ও জমিদারদের খজনা আদায় বিলুপ্ত হলেও রয়ে গেছে হালখাতার প্রথা । ব্যবসায়ীরা একটা বালাম বই রাখেন, যার মধ্যে পুরোনো বছরের হিসাব-নিকাশ থাকে । তাকে বলা হয় খেরো খাতা । সে সব পাওনা আদায় হওয়ার পর নতুন করে আরেকটি খাতায় হিসেবেরে জের তোলা হয় । এ খাতায় হিসাব হালনাগাদ করা হয় বলেই অনুষ্ঠানটিকে বলা হয় ‘হালখাতা’ ।

বৈশাখী মেলা

পহেলা বৈশাখের প্রধান আকর্ষণ ও উৎসব হলো বৈশাখী মেলা । গ্রামগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে এ দিন মেলা হয় । কোথাও কোথাও মেলা হয় এক দিনের, কোথাও বা বেশি দিনের । এমনকি সপ্তাহ ও মাসব্যপী বৈশাখী মেলাও চলে । মেলয় সব ধরনের মানুষই যায় ।

আধুনিক বাংলা নববর্ষ উদযাপন

 

pahela-boishakh-history-of-bengali-new-year-celebrations
Image by Moheen Reeyad from wikimedia
 

আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে । প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্তন ও পূজার ব্যবস্থা করা হয় । এরপর ১৯৩৮ সালেও অনুরূপ কর্মকান্ডের উল্লেখ পাওয়া যায় । তবে ১৯৬৭ সনের পূর্বে ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালনের রীতি তেমন একটা জনপ্রিয় হয়নি ।