আমাদের পৃথিবীতে প্রায় ২,৯৮,০০০ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে । এতোগুলো প্রজাতির মধ্যে কিছু গাছ সুন্দর ও সুগন্ধী ফুল উৎপন্ন করে, কিছু গাছ মাজাদার পুষ্টি-সমৃদ্ধ ফল উৎপন্ন করে, কিছু গাছে আছে ঔষধি গুনাবলী এবং আবার এদের মধ্যে কিছু কিছু উদ্ভিদের রয়েছে পুরোপুরি অদ্ভুত চেহারা ও বৈশিষ্ট্য । চলুন বিশ্বের এরকম সবচেয়ে ১০ অদ্ভুত উদ্ভিদ সম্পর্কে জানা যাক ।

১. বাওবাব গাছ

baobab-tree
Image Source : Wikimedia


‘বাওবাব’ আজব এক গাছ । এগুলোর গোড়া হয় প্রকান্ড ড্রামের মত গোল আর মোটাও । উচ্চতা খুব বেশি নয় । ‘লাউ’ এর মতো দেখতে বাওবাব গাছের ফল খুব মজাদার যা বানরদের খুব প্রিয় খাবার ।এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় আফ্রিকায় । তবে এই গাছের এক প্রজাতি অস্ট্রেলিয়াতেও পাওয়া যায় ।বাওবাব গাছের কান্ড দেখতে অনেকটা বোতলের মত হওয়াতে একে ‘বোতল গাছ’ নামেও ডাকা হয় ।

শুধু ফল নয়, এই গাছের গোটা অংশই মজাদার । বাকল থেকে বের হয় শক্ত ও লম্বা আশঁ । যা দিয়ে তৈরি করা হয় রশি এবং কাপড় । এদের কান্ড কাঠ খুবই নরম এবং হালকা । তাই যেকোনো জীব জন্তু বা পাখি অনায়াসে ঠুঁকরে গর্ত করে ফেলতে পারে এবং তৈরি করতে পারে রাস্তা । অনেক সময় মানুষেরাও এদের গোড়ায় গর্ত করে মজার বিশ্রামগার তৈরি করতে পারে ।

২. কলস উদ্ভিদ (Pitcher plant)

pitcher-plant
Photo from PxHere

কলসের মতো দেখতে অদ্ভুত উদ্ভিদটি মাংসাশী। মানুষ খেঁকো না হলেও এটি ছোট ছোট পোকা-মাকড় ও কীটপতঙ্গ শিকার করে জীবন ধারন করে ।বিশেষ তরল দিয়ে ভরা গভীর গহ্বর শিকার ধরতে সাহায্য করে।

 

৩. ভিনাস ফ্লাইট্রেপ

venus-flytrap
Image by Lawrie Phipps from Pixabay

এটিও কলস উদ্ভিদের মতো মাংসাশী এবং খাদ্য হিসেবে ক্ষুদ্র পোকা-মাকড় ও কীটপতঙ্গ খেয়ে থাকে ।এটি খুব দ্রুত নিজের শিকারকে ফাঁদে আটকে দেয় ।ডাইজেস্টিভ এনজাইম দশদিনের মধ্যে পোকা-মাকড় হজম করতে সাহায্য করে ।

৪. রাফালেসিয়া আনারোলি (Rafflesia Arnoldii)

rafflesia-arnoldii-plant
Image from wikimedia
‘রাফালেসিয়া’ হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফুল ।এক একটি ফুলের আকার প্রায় তিন ফুট পর্যন্ত বড় হয় ।   এটি প্রধানত ‘সুমাত্রা’র বনে পাওয়া যায় ।তবে ফুলটির গন্ধ খুবই অপ্রীতিকর ও বাজে ।

৫. বেসবল প্লান্ট

baseball-plant
Image from wikimedia

‘ইউফির্বিয়া ওবেসা’ বৈজ্ঞানিক নামের গাছটির দেখতে ও আকৃতিতে ঠিক যেন ‘বেসবল’ এর মতো । এটি সাধারণত দক্ষিণ আফ্রিকার কারু মরুভূমিতে দেখতে পাওয়া যায় ।তবে বেসবল গাছটি রয়েছে বেশ কিছু বিষাক্ত উপাদান যা শরীরের চামড়ায় তীব্র জ্বালার সৃষ্টি করে ।  

৬. ক্যাকটাস

cactus-plant
Image by liqionary from Pixabay
পাতা নেই, শুধু গা-ভর্তি কাঁটা । এমন উদ্ভিদের নাম ক্যাকটাস । উদ্ভিদটির কথা বললে হয়তো অনেকেই মনে করবেন, দুনিয়ার এত গাছ থাকতে কাঁটায় ভরা এই অপ্রয়োজনীয় গাছের কথা কেন? কিন্তু ক্যাকটাস আসলে অপ্রয়োজনীয় কোনো গাছ নয় । আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান থেকে শুরু করে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও ক্যাকটাসের রয়েছে অনবদ্য ভূমিকা ।

৭. হোয়াইট বেনবেরি প্লান্ট 

white-baneberry-plant
Image from wikimedia
হোয়াইট বেনবেরি (White Baneberry) নামের উদ্ভিদটির সুন্দর ফল দেখে যদি খেতে চান তাহলে তা মোটেও করবেন না । কারণ এতে রয়েছে মানব দেহের পক্ষে ক্ষতিকর বিষাক্ত উপাদান ।ফলগুলো দেখতে পুতুলের চোখের মতো হওয়াতে এর বিকল্প নাম ‘পুতুলের চোখ’। উদ্ভিদটি পূর্ব উত্তর আমেরিকা, পূর্ব কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যর বনভূমিতে পাওয়া যায় ।

৮. লজ্জাবতী উদ্ভিদ

Image from Wikimedia

লাজুক প্রকৃতির উদ্ভিদটি খুব পরিচিত উদ্ভিদগুলোর মধ্যে । এটি আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখতে পাওয়া যায় ।উদ্ভিদটির স্নায়ুতন্ত্র খুবেই সংবেদশীল প্রকৃতির কারণে পাতাগুলি স্পর্শ করার সাথে সাথে নিজেকে গুটিয়ে ফেলে ।তাছাড়া গাছের ফুলগুলিও খুব সুন্দর ।

৯. সানডিউ প্লান্ট (Sundew plant)

sundew-plant
Image by freerkprenzel from Pixabay 
.

সানভিট প্লান্টের লম্বা পাতা প্রচুর ঘন গ্রন্থিযুক্ত রোমে আবৃত ।কোনো মাছি যদি এর আঠালো রোমে কোনোভাবে আটকে যায় তাহলে উদ্ভিদটি ধীরে ধীরে এনজাইম নিঃসরণের মাধ্যমে মাছিটিকে হজম করে ফেলে ।

১০. জায়ান্ট সিকোয়াইয়া (Giant sequoia)

giant-sequoia-plant
Image from Wikimedia

আকারের দিক থেকে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ আকৃতির উদ্ভিদ ।এর বৃহৎকায় আকারের জন্য একে দৈত্য গাছও বলা হয় ।এই উদ্ভিদগুলোর আয়ুষ্কাল প্রায় ৩০০০ বছর পর্যন্ত হতে পারে ।