causes-of-life-on-earth-in-bangla
Image by purwaka seta from Pixabay

পৃথিবী সৌরগতের একমাত্র গ্রহ যেখানে জীবন সৃষ্টি হওয়ার সমস্ত উপাদন বিদ্যামান । তাই জীবিত ক্ষুদ্র অণুজীব থেকে শুরু করে বুদ্ধিমান মানুষের মত জীবের বসবাস এখানে । এটি হওয়ার যেসমস্ত কারণ রয়েছে সেগুলো হচ্ছে-১.বায়ুমন্ডল, ২.জলবায়ু, ৩.পানি, ৪.আলো ৫.সূর্য, ৬.ওজোন স্তর, ৭.পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্র প্রভৃতি । চলুন একটু বিস্তারিত আলোচনা করা যাক ।

পৃথিবীর চারদিক নানা প্রকার গ্যাসীয় উপাদান দ্বারা বেষ্টিত । অদৃশ্য এই গ্যাসীয় আবরণ পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে । একে বায়ুমন্ডল বলে । পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির আকর্ষণে (পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্র) বায়ুমন্ডল ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে লেপ্টে আছে । আর পৃথিবীর সঙ্গে আবর্তিত হচ্ছে । বায়ুর চাপের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠে পানির ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি এবং উপরের দিকে ঘনত্ব খুবই কম । পানি জীবনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক হিসাবে বিবেচিত হয়।  বায়ুমন্ডলে নাইট্রোজেন ও অক্সিজেনের প্রাধান্য রয়েছে । সকল প্রাণীর জন্য অক্সিজেন অত্যাবশ্যক ।কর্বন-ডাই-অক্সসাইড ছাড়া অন্যান্য উপাদান বায়ুতে মোটামুটি অপরিবর্তনীয় পরিমাণে থাকে । তবে ধুলা, ধোঁয়া, জলীয় বাষ্প ইত্যাদি উপাদান বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পরিমানে থাকে । পৃথিবীর সমস্ত জীবের বেঁচে থাকার জন্য বায়ুমন্ডলের গুরুত্ব অপরিসীম । বায়ুমন্ডল সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে প্রাণীকুলকে রক্ষা করে । সূর্যের গ্যাসীয় উপাদান, যেমন-কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) ও অক্সিজেন (O2) যথাক্রমে উদ্ভিদ ও প্রাণীকে বাঁচিয়ে রাখে ।

causes-of-life-on-earth-in-bangla
Image Source : wikimedia   

ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুমন্ডলের সর্বনিম্ন স্তর হলো ট্রাপোমন্ডল । এ স্তরটি গড় গভীরতা প্রায় ১৩কি.মি । এটি মানুষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় স্তর । কেননা, আর্দ্রতা, কুয়াশা, মেঘ, বৃষ্টি, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি এই স্তরে লক্ষ করা যায় । উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে এ স্তরে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যায় । আবহাওয়া ও জলবায়ুজনিত যাবতীয় প্রক্রিয়ার বেশির ভাগই বায়ুমন্ডলের এস্তরে ঘটে থাকে । ট্রাপোমন্ডলের উর্ধ্বসীমাকে ট্রপোপস বলে । ট্রপোপসের গভীরতা সরু, এখানে বায়ু স্থির । ঝড় বৃষ্টির প্রাদুর্ভাব না থাকায় বিমান এস্তর দিয়ে নির্বিঘ্নে চলাচল করে । বায়ুমন্ডলে ওজোন (Ozone) গ্যাসের একটি স্তর আছে, যা ওজোন স্তর নামে পরিচিত । এর গভীরতা প্রায় ১২-১৬ কি.মি. । সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করায় এর তাপমাত্রা থীরে ধীরে প্রায় ৪০ (চল্লিশ ডিগ্রি) সেলসিয়াস পর্যন্ত হয় । এ স্তরটি পৃথিবীকে প্রাণীজগতের বাস উপযোগী করেছে ।

পৃথিবী সূর্য থেকে আলো ও তাপ পায় । সূর্যের আলো ছাড়া পৃথিবী চির অন্ধকারে থাকত । পৃথিবীতে প্রাণের স্পন্দন থানত না এবং জীবজগ উদ্ভিদ ও প্রাণী কিছুই বাঁচত না । পৃথিবীতে মানুষের কর্মকান্ড বায়ুমন্ডলের গঠন ও উপাদনে পরিবর্তন করতে সাহার্য করে । ব্যাপকভাবে গাছপালা কেট ফেলা, কলকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া ও বিষাক্ত গ্যাস বায়ুমন্ডলে দূষিত করে । প্রাণীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই বায়ুমন্ডলকে বিশুদ্ধ রাখা দরকার ।

জীবজন্তুর বেঁচে থাকার জন্য প্রচুর আলো, বাতাস ও পানি । পৃথিবী পৃষ্ঠে গড় তাপমাত্রা ১৩.৯০ সেলসিয়াস । ভূত্বকে রয়েছে প্রয়োজনীয় পানি । সূর্য থেকে যে তাপ ও আলো পৃথিবীতে জীবজন্তুর জন্য সহনীয় ।জীবজন্তু ও উদ্ভিদ জীবন ধারণের জন্য এগুলো উপযোগী ও প্রয়োজনীয় । এজন্য পৃথিবীতে জীবজন্তু বসবাস করতে পারে ।