amazon-rainforest-intersting-facts
Image by CIFOR from Flickr

দক্ষিণ আমেরিকায় অবস্থতি আমাজন বন পৃথিবীর সবচেয়েবড়বনাঞ্চল । সমগ্র পৃথিবীতে যত রেইনফরেস্ট বা বৃষ্টি বন আছে তার অর্ধেক ইহলো আমাজন ।পৃথিবীর মোট অক্সিজেনের ২০শতাংশ উপাদিত হয় আমাজনে । সেকারণেএকে পৃথিবীর ফুসফুস বলা হয়ে থাকে । পৃথিবীর প্রাকৃতিক সপ্তাস্শার্যের অন্যতম আমাজন মহাবন সম্পর্কে জানবো এই পোষ্টে ।

আমাজন বনের সৃষ্টি হয়ে ছিল প্রায় ৫ কোটি বছর আগের ইয়াসিনযুগে । সেসময় আমাজন বেসিনে (অববাহিকায়)আর্দ্র ও উষ্ণ জলবায়ুর আবির্ভাবের ফলে আমাজন বনের উদয় ঘটে ।

আমাজন এর আয়তন ও অবস্থান :

আমাজন জঙ্গল দক্ষিণ আমেরিকায় প্রায় সিংহ ভাগ অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত। আমাজন বন এতোটাই বড় যে আয়তনের দিক থেকে আমাজন বন বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩৮ গুণ বড় । আমাদের সুন্দরবন যেমন বাংলাদেশ ও ভারত দুটি দেশের মধ্যে অবস্থিত; আমাজন তেমনি ভাবে নয়টি দেশের ৭০ লক্ষ বর্গ কিলো মিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ।

amazon-rainforest-intersting-facts
Image by CIFOR from Flickr
 

মহাবন আমাজনের ৬০শতাংশ শুধুমাত্র ব্রাজিলে, ১৩শতাংশ পেরুতে, ১০শতাংশ কলেম্বিয়ায় অবস্থিত । এবং অন্যান্য ১৭ শতাংশ বনাঞ্চল বাকি ছয়টি দেশ বলিভিয়া, ইকুয়েডর, ভেনিজুয়েলা, গায়ানা, সুরিনাম ও ফেঞ্চ গায়নায় অবস্থিত ।

আকারের বিশালতার মতই প্রাণী ও উদ্ভিদকুলের মধ্যে ও রয়েছে অবিশ্বাস্য বৈচিত্র । জীব-বৈচিত্রসমৃদ্ধ এই বনে ৪০ হাজার প্রজাতির প্রায় তিন হাজার নয় শত কোটি বৃক্ষ রয়েছে । আমাজন বনে আছে প্রায় ১ হাজার ৩০০ প্রজাতির পাখি, ২ হাজার ২০০ প্রজাতির মাছ, চারশত ২৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, তিনশত ৭৮ প্রজাতির সরীশৃপ, চারশত ২৮ প্রজাতির উভয়চর প্রাণী এবং ২৫ লক্ষ প্রজাতির পোঁকা-মাকড় রয়েছে । বিপদজনক অনেক প্রাণীই আমাজন জঙ্গলে বাস করে চিতাবাঘ, বিদ্যুৎ হিল, মাংসখেকো মাছ প্রিয়ানহা, বিষাক্ত ডার্কফ্রোগ ব্যাঙ অসংখ্য বিষাক্ত জাতের সাপর য়েছে এখানে ।

আমাজন নদী :

আমাজন বনের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত নদীটি আমাজন নদী হিসেবে পরিচিত । আমাজন নদী আমাজন বনের জীবনী শক্তি । পেরুর আন্দ্রিজ পর্বত নেভানল হিংসী নামক চূড়া থেকে এ নদীর উৎপত্তি । এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী । এই পৃথিবীর যেকোনো নদীর তুলনায় বেশি জল ধারণ করে ।প্রায় এক হাজার উপনদী মিলিত হয়ে আমাজন নদী গঠিত ।

আমাজন উপজাতিদের জীবন

amazon-rainforest-intersting-facts
Image by Hans Schwarzkopf from Pixabay
  

আমাজন বনের সাথে মানবকুলের সম্পর্ক বেশ পুরনো । আমাজনে বসবাসরত বেশিরভাগ জনগোষ্ঠি তাদের আবাস গড়ে তুলেছিল নদী ঘেসা অঞ্চলগুলোতে । যাতায়াত, মাছধরা ও জমির উর্বরতার ভিত্তিতে তারা বাসস্থান নির্বাচন করত । আমাজন রেইনফোরেস্টের মধ্যেই এদের জীবন শহুরে সংস্কৃতি এদের স্পর্শ করতে পারে নি । এদের রয়েছে নিজেস্ব জীবন যাপনের রীতি নীতি ও বিশ্বাস ।

আমাজন বনের কিছু রহস্যময় ও বিচিত্র বিষয় :

১. ব্রাজিলিয়ান আমাজনের বুকে বেশকিছু বৃত্তাকার নকশা দেখতে পাওয়া যায় । নকশাগুলো আজও পর্যন্ত রহস্যে ঘেরা । নৃত্বাত্তিগণ এই ধাঁধাঁর উত্তরের সন্ধান করে চলেছেন । ধারণা করা হয় নকশাকৃত অংশগুলো সমাধি অথবা সুরক্ষাক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো ।প্রচলিতমতে, প্রাচীন অ্যামাজনীয়নরা এই নকশার শিল্পী ছিলেন । তবে এই নকশা আঁকার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে তেমন কোনো যন্ত্রপাতির তথ্যগবেষণা করেও পাওয়া যায় নি । প্রাপ্ত আলামত থেকে চিহিৃত করা যায় এসব স্থাপনা ১২০০ থেকে ১৫০০ বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল ।

amazon-rainforest-intersting-facts
Image Source The Guardian

২. আমাজনের আরেকটি রহস্যময় বিষয় হল এরমধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া এক ফুটন্ত নদী । আক্ষরিক অর্থেই নদীর পানি অত্যন্ত উষ্ণ । এ নদীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৯৩ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে । বিজ্ঞানীরা এখনও নদীর পানি উষ্ণ হওয়ার প্রকৃত কারণ বের করতে পারেনি ।স্থানীয়রা মনে করে এটি এক বিশেষ প্রাকৃতিক শক্তি ফলে তারা কখনই এ নদীতে সাঁতার কাটেনা ।

৩. আমাজনে অতিকায় প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে রয়েছে ভিক্টোরিয়া অ্যামাজনিয়া নামের একপ্রকার জলপদ্ম ।রানী ভিক্টোরিয়ার নামে এর নামকরণ করা হয়েছে । পদ্মপাতা গুলো আয়তনে তিন মিটার পর্যন্ত বড় হতে পারে এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরও ভার বহন করতে পারে ।

 

রেফারেন্সসমূহ :

https://en.wikipedia.org/wiki/Amazon_rainforest,

https://en.wikipedia.org/wiki/Amazon_basin,

https://en.wikipedia.org/wiki/Amazon_River,