red-crescent-and-red-cross-day-history-principles-work-differences-in-bangla
Image from globalfirstaidcentre.org



আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও আর্তমানবতার সেবা, অসহায় মানুষের কল্যাণে হেনরী ডুনান্ট তাঁর মহতী উদ্যোগে এই রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট প্রতিষ্ঠা করেন । এই হেনরী ডুনান্ট ১৮২৮খ্রিঃ ৮মে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে জন্মগ্রহণ করেন । তার জন্ম দিনের প্রতি সম্মাননারূপে প্রতিবছর ৮মে পালিত হয় বিশ্ব রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট দিবস । 

চলুন জেনে নেয়া যাক বিশ্ব রেড ক্রিসেন্ট দিবসের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং যে কারণে এটি বিশ্বব্যাপি পালন হয়ে আসছে ।

পটভূমি : রেডক্রস এবং রেডক্রিসেন্টের আন্দোলনের পিছনে রয়েছে এক মহান ইতিহাস । ১৮৫৯ সালে ২৪ জুন ইতালীর উত্তরে এক পল্লী প্রান্তরে সংগঠিত হয় ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে এক ভয়াবহ ও মরণযুদ্ধ । এটি ‘সলফেরিনোর যুদ্ধ’ হিসেবে পরিচিত। ১৬ ঘণ্টা ব্যাপী এই যুদ্ধে প্রায় ৪০ হাজার সৈন্য মারা যায় । আহত সৈন্যরা চিকিৎসার অভাবে যুদ্ধক্ষেত্রেই মারা যায় । সেই সময় সুইজারল্যান্ডের এক যুবক হেনরী ডুনান্ট তার ব্যবসার কাজে ফ্রান্সের তৃতীয় নেপোলিয়নের কাছে যাচ্ছিলেন । যুদ্ধক্ষেত্রের এই করুণ পরিণতি দেখে তার হৃদয় কেঁদে ওঠে । তিনি গ্রামবাসীদের ডেকে ঝাঁপিয়ে পরেন আহত যোদ্ধাদের সেবা করার জন্য । এই সেবায় যারা অংশ নিয়েছিলো তারা অধিকাংশই ছিল মহিলা । ডুনান্ট এই যুদ্ধের ভয়াবহতা দিয়ে এক বই লিখেন ‘এ মেমোরি অব সলফোরিনো’ নামে বইয়ের মধ্যে তিনি বিশ্ব বিবেকের কাছে সেবার এক মানবিক আবেদন জানান ।

সে সময় জেনেভার একটি সমাজ সেবা সংগঠন ‘পাবলিক ওয়েল ফেয়ার সোসাইটি’ সর্বপ্রথম ডুনান্টের আবেদনে সাড়া দেয় । ১৮৬৩ সালের ৯ ফ্রেব্রুয়ারি ডুনান্ট ৪ জন জেনেভা বাসীকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেন যার নাম হলে ‘কমিটি অব ফাইভ’ । পরবর্তীতে এই কমিটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি’ । এ বছরই ২৬ অক্টোবর ১৬টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে জেনেভায় আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বান করা হয় । সম্মেলনে ডুনান্টের মহতী প্রস্তাগুলো পর্যালোচনার পর গৃহীত হয় এবং সেখান থেকেই জন্ম লাভ করে আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট । 

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য : 

১. মানবতা (Humanity), ন্যায় (Impartiality), নিরপেক্ষতা (Neutrality), স্বাতন্ত্র্য (Independence), স্বেচ্ছাকৃত সেবা (Voluntary Service), একতা (Unity), বিশ্বজনীনতা (Universality)এই সাতটি হচ্ছে আন্তর্জাতিক রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি’র মূলনীতি ।

২. রেড ক্রিসেন্ট ও রেড ক্রস এর মধ্যে পার্থক্য কি?

red-crescent-and-red-cross-day-history-principles-work-differences-in-bangla
Image by Babak Fakhamzadeh from Flickr


রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট হচ্ছে মানবতাবাদী একই আন্তর্জাতিক সংস্থা কিন্তু প্রতীক আলাদা ।যেহেতু ক্রস চিহ্নটি হচ্ছে খ্রিস্ট ধর্মের প্রতীক, তাই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলিতে ব্যবহৃত হয় না ।তাছাড়া ক্রিসেন্ট (অর্ধচন্দ্র) চিহ্নটি একটি ইসলামী প্রতীক তাই মুসলিমরাও একইভাবে সম্মান করে । সুতরাং ইসলামী দেশগুলিতে রেড ক্রিসেন্ট অন্যান্য দেশে রেড ক্রস এর মাধ্যমে মানবিক সেবা প্রদান করে থাকে ।

৩. বর্তমানে আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিস ফেডারেশন (আইএফআরসি) মাধ্যমে ১৮৬টির বেশি দেশে এই সেবা সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে ।