how-to-be-a-good-listener-in-bangla

যোগাযোগ রক্ষায় ভালো শ্রোতা হওয়া খুবই জরুরি । কোনো কিছু শোনা মানেই ভালো শ্রোতা হওয়া নয় । ভালো শ্রোতা অন্যের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করেন এবং যা শোনেন তা নিয়ে ভাবেন । আমাদের চারপাশে অনেকেই প্রচুর কথা বলেন এবং অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শেনেন না বা খানিকটা শুনলেও তা ভাবনা-চিন্তার গভীরে নেন না । এরা কোনোভাবেই ভালো শ্রোতা নন । ভালো শ্রোতার কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যা দেখে বোঝা যায় যে তিনি ভালো শ্রোতা । শুধু কর্মক্ষেত্রেই নয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সফল হওয়ার জন্য ভালো শ্রোতা হওয়া খুবই প্রয়োজন । চলুন ভালো শ্রোতা হওয়ার উপায় বা কৌশলসমূহ জেনে নেওয়া যাক । 

উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা

একজন গুণী মানুষ যেমন উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা ছাড়া কোনো কাজ শুরু করেন না, তেমনি একজন ভালো শ্রোতাও গঠনমূলক কোনো উদ্দেশ্য ছাড়া কোনো কথায় কর্ণপাত করেন না । একজন ভালো শ্রোতা শোনার আগেই ঠিক করে নেন, কী কী তথ্য তার প্রয়োজন এবং কীভাবে সেই সকল তথ্য তিনি মনে রাখবেন । মনে রাখার জন্য একজন ভালো শ্রোতা বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করে থাকেন; যেমন-মূখ্য শব্দ মনে রাখার কৌশল (এক্ষেত্রে শ্রোতা মূখ্যশব্দসমূহ মনে রাখেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্যাদি জ্ঞান হিসেবে তার পূর্বে শেখা বিষয়ের সাথে একভূতী করে নেন) । তবে, অধিক তথ্যের ক্ষেত্রে শ্রোতা সেগুলোকে নোট করে বা টুকে নেয় । শোনার আগেই যদি উদ্দেশ্য ঠিক করে নেওয়া যায়, কিংবা কী কী তথ্য জানা প্রয়োজন তা ঠিক করে নেওয়া যায় তবে শোনা তথ্য মনে রাখা সহজ হয় ।

মনোনিবেশ করা

ভালো শ্রোতা হতে হলে অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে । কোনো কিছু মনোযোগ দিয়ে শোনা সহজ ব্যাপার নয়; এজন্য অনুশীলন ও চেষ্টার প্রয়োজন । অনেকের ক্ষেত্রেই কখনো কখনো কারো কথা বা বক্তব্যের প্রতি মনোনিবেশ করা কঠিন হয়ে পড়ে । অনেকে আবার খুব দ্রুত অন্যের বক্তব্যের গভীরে মনোনিবেশ করতে পারেন । এ জন্য চেষ্টা ও অনুশীলন প্রয়োজন ।

মানসিক ও শারীরিকভাবে স্থির থাকা

ভালো শ্রোতা হতে হলে কোনো কিছু শোনার সময় মানসিক ও শারীরিকভাবে স্থির থাকতে হবে । কেউ যখন কথা বলেন বা বক্তব্য প্রদান করেন, তখন অনেকেই বিভিন্ন রকম কাজ করেন, নানা রকম চিন্তা-ভাবনা করেন । এ রকম অবস্থায় মনোযোগ দিয়ে শোনা যায় না । কাজেই মনোযোগী শ্রোতা হতে হলে কোনো কিছু শোনার সময় অবশ্যই আগ্রহ থাকতে হবে এবং মানসিক ও শারীরিকভাবে স্থির থাকতে হবে ।

how-to-be-a-good-listener-in-bangla

চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা

আমাদের দেশে গুরুজনদের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা বা কথা শোনাকে অনেকেই অভদ্রতা মনে করে থাকেন । কিন্তু কোনো কিছু মনোযোগ দিয়ে শোনার ক্ষেত্রে চোখের মাধ্যমে যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ । শ্রোতা বক্তার চোখের দিকে তাকিয় অনেক কিছুই অনুমান করতে পারেন; বিষয়বস্তুর গভীরে গিয়ে মানসিক যোগাযোগ তৈরি করতে পারেন । ফলে, শোনা বিষয়টি অনেক অর্থবহ হয় ।

কথার মাঝে কথা না বলা

অন্য কেউ যখন কথা বলেন, তখন আমাদের কথা বলা উচিত নয় । কেউ কথা বলার সময় যদি আমরা কথা বলি তবে একদিকে আমারা যেমন তার কথা ভালোভাবে শুনতে পারি না; তেমনি তিনিও আমাদের কথা শুনতে পারেন । কাজেই মনোযোগী শ্রোতা হতে হলে অন্যরা যখন কথা বলেন তখন নিজে নিশ্চুপ থেকে তার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার অভ্যাস তৈরি করতে হবে । একজনের কথা বলা শেষ হলে তারপর নিজে কথা বলতে হবে ।

আবেগ ও ব্যক্তিগত আচরণ

ব্যক্তিগত আচরণ কার্যকর সংযোগ স্থাপনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । একজন ভালো শ্রোতা বক্তব্যের সাথে একাত্ম হয়ে যান । তিনি যা শুনছেন সে অনুযায়ী তার অভিব্যক্তি যেমন-মৃদু হাসা, অবাক হওয়া, দুঃখের অভিব্যক্তি দেওয়া ইত্যাদি পরিবর্তন হয়; সময় ও সুযোগ বুঝে অথবা অন্যের বক্তব্য শেষ হওয়ার পরে তিনি কথা বলেন ।